বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন
গাজীপুর থেকে সাইফুল আলম সুমনঃ— গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা সড়কের বেলচালা ও কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়ার কড়িচালা এলাকা। দুটি উপজেলার শেষ প্রান্তের গ্রাম বলে অনেকটা অবহেলিত এ জনপদ। এ দুটি উপজেলাকে বিভক্ত করেছে শালদহ নদী। নদীর দু’পাশে পিচঢালা পথ থাকলেও একটি সেতুর অভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারও মানুষ ও তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা। একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘ পথ ঘুরে যোগাযোগ করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। দেখলে মনে হবে সেতুর অভাবে গ্রামগুলোর উন্নয়নও যেন থমকে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ জামালপুরে দু’টি পুরনো মর্টার শেল উদ্ধার
স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের বেলচালা ও কালিয়াকৈরের ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের কড়িচালা গ্রামে বারতোপা বাজার-ফুলবাড়িয়া সড়কটিকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে সালদহ নদী। এই সড়ক দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনে শ্রীপুরের বেলচালা, চিলমারি, জয়নাতলী ও কালিয়াকৈরের কড়িচালা, ফুলবাড়ীয়া, রামপুর ও মরিচের চালা গ্রামের হাজারো মানুষ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়াও এই সড়কটি পার্শ্ববর্তী কালিয়াকৈর উপজেলা হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ফুলবাড়ীয়ার মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সংযোগ স্থাপন করেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মিত না হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। বছরের পর বছর স্থানীয়রা এখানে একটি সেতুর দাবি জানালেও দায়িত্বশীলদের গোচরে তা আসছে না। তাই এখন স্থানীয়দের বর্ষায় নৌকা আর শুকনো সময়ে হেঁটে নদী পার হতে হয়।
আরও পড়ুনঃ ভাঙ্গুড়ায় শিশু কুঞ্জে শিশু, কিশোর ও বয়স্কদের ভীড় বেড়ে চলেছে
বেলচালা গ্রামের কৃষক ইরফান আলী জানান, বারতোপা বাজার-ফুলবাড়ীয়া সড়কটি জন গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। আশপাশের লোকজনের ব্যবসা বাণিজ্য, কৃষিসহ নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন এপার ওপারে গমন করতে হয়। সেতুর অভাবে এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। বর্ষা আসলে দুর্ভোগের চিত্রটা যেন আরো বাড়ে। বিশেষ করে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তিনি আরো জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই তারা এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রতিবার নির্বাচন এলে প্রার্থীরা সেতুর প্রতিশ্রæতি দেন, কিন্তু পরে তা ভুলে যান।
আরও পড়ুনঃ মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন
সেতুর অভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রীপুর ও কালিয়াকৈরের কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষা নিতে হয় ফুলবাড়ীয়ার আক্কেল আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমী আক্তার জানায়, তার বাড়ি বেলচালা গ্রামে। তার ও তার পাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে কয়েকশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন নদী পার হয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে যায়।
মাওনা ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য রুসমত আলী বলেন, একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে কয়েকটি গ্রাম। সবচেয়ে বড় সমস্যা গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নচিত্র থমকে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলছাত্রী হত্যার ঘটনায় সৎ মামা গ্রেপ্তার
মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম খোকন জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে একটি সেতুর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেতুর অভাবে বছরের পর বছর গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হওয়ায় গ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে। সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে একাধিকবার তাগাদা দিলেও তারা এখনো সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেননি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের গাজীপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বারেক জানান, দু’পাশে সড়ক থাকার পরও সেতু নির্মাণ না হওয়া দুঃখজনক। দ্রুতই সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জনদুর্ভোগ লাঘবে সংযোগ স্থলে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply